মেছতা দূর করার উপায় - (দূর করার ঘরোয়া উপায়)

 

মেছতা দূর করার উপায়


মুখে মেছতার দাগ নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তার পড়েন। কীভাবে এই দাগ দূর করা যায়, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন সবাই। একই সঙ্গে বিভিন্নজনের পরামর্শে কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে মেছতার দাগ আরও গাঢ় হয় ত্বকে। একবার মুখে মেছদার দাগ পড়লে তা যেন সব সৌন্দর্যই নষ্ট করে দেয়।

মেছতা কী?

মেছতাকে বলা হয় মেলাজমা অথবা কোলাজমা। এটি একটি প্রচলিত ত্বকের সমস্যা। মেছতা হলে ত্বকে হালকা বাদামি রঙের দাগ পড়ে। মুখ-কপালসহ বুকেও হতে পারে মেছতা।

কেন মেছতা হয়?

জিনগত কারণেই বেশিরভাগ মানুষের ত্বকে পড়ে মেছতার দাগ। পরিবারের কারো থাকলে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে মেছতা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অন্যদিকে নারীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ খাওয়ার কারণেও মেছতা পড়ে থাকে। এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় অধিকাংশ নারীর মুখে মেছতা পড়তে দেখা যায়।

এমনকি নারী মেনোপোজের সময় হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেওয়ার ফলেও মুখে পড়তে পারে মেছতার দাগ। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো, সানস্ক্রিন ব্যাতীত সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসা।

মেছতা কত প্রকারের হয়ে থাকে?

ত্বকের লেয়ার অনুযায়ী মেছতা দু’ধরনের হতে পারে। ত্বকের ওপরের লেয়ারে যদি হয়ে থাকে; তাহলে এটি অ্যাপিডার্মাল মেলাজমা। আর ডার্মাল লেয়ারে যদি হয়ে থাকে, তাহলে একে ডার্মাল মেলাজমা বলা হয়। মেছতা একবার হলে তা একেবারে দূর করা সম্ভব নয়। তবে ধীরে ধীরে এর দাগ হালকা করা যায়। এজন্য বাজারের প্রসাধনী বাদ দিয়ে ঘরোয়া উপায়ে করুন এর সমাধান।

মেছতা দূর করার উপায়

হলুদ

সবার রান্নাঘরেই হলুদ থাকে। এই উপাদানটি সবাই রান্নায় ব্যবহার করেন। এমনকি রূপচর্চাতেও যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে হলুদ। হলুদে থাকা কার্কিউমিন ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
কার্কিউমিনে ইউভি প্রতিরক্ষামূলক গুণাবলী থাকে। এর একটি হলো, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অন্যটি অ্যান্টি-মুটাগেন। এ দুটি উপাদানই ত্বকের সব ধরনের প্রদাহ কমায়।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, টাইরোসিনেজ ও মেলানিন উৎপাদনে বাঁধা দেয় কার্কুমিন। এরা উভয়ই মেছতার দাগের জন্য দায়ী। অন্য আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, কার্কুমিনে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো ত্বকের যে কোনো কালচে দাগ দূর করতে পারে।

লেবুর রস

লেবুও সবার ঘরেই থাকে। এক লেবুয় থাকে নানা উপকারিতা। এর রসে প্রাকৃতিক ব্লিচিং অ্যাজেন্ট থাকে। ত্বকের যে কোনো কালচে দাগ হালকা করে দিতে পারে লেবু।

তবে লেবুর রস কখনো সরাসরি মুখে ব্যবহার করবেন না। এর সঙ্গে যে কোনো ফেস মাস্ক ব্যবহার করুন। এ ছাড়াও হলুদের গুঁড়োর সঙ্গে লেবুর রস ও মধু মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।

মেছতা প্রতিকারের এসব ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি। যেমন- ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় কোনো খাবার খাবেন না। যারা নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাচ্ছেন, তারা এখনই বন্ধ করুন। আর অবশ্যই রোদে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করুন।

মেছতার দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

মুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতে চাইলে নিয়মিত মুখের ত্বকের সঠিক যত্ন নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু মুখের নানা রকম দাগ নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভোগেন। কিন্তু দাগ কীভাবে দূর হবে, সেটি জানা নেই! 

মুখের রোদে পোড়া দাগ দূর করতে পারেন ঘরেই। আসুন জেনে নিই কীভাবে দূর করবেন ত্বকের রোদে পোড়া দাগ।
  • নিয়মিত লেবুর রস মুখে দিতে পারেন।
  • গুঁড়ো দুধ ও গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
  • অ্যালোভেরা জেল ও আলুর পেস্ট নিয়মিত মুখে লাগাতে পারেন।
  • আমন্ড অয়েল ও মধু মুখে লাগিয়ে হালকা করে ঘষুন। এর পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 
  • কমলালেবুর খোসা গুঁড়ো করে তার সঙ্গে দুধ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। 
  • মেছতার জায়গায় লেবুর রস, সামান্য ভিনেগার ব্যবহার করা যেতে পারে। কেউ চাইলে এর সঙ্গে অল্প পরিমাণে পানি মিশিয়ে নিতে পারেন।
  • লেবুর রস, মধু ও কাঁচা পেঁপে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। দাগ কমাতে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
Next Post Previous Post