আত্তাহিয়াতু সূরা | অর্থ, বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত

 

আত্তাহিয়াতু সূরা | অর্থ, বাংলা উচ্চারণ, শানে নুযূল ও ফজিলত

আত্তাহিয়াতু সূরা পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। কিন্তু অনেকের আত্তাহিয়াতু সূরা পড়া সহিহ নয়। আবার অনেকেরই আত্তাহিয়াতু সূরার অর্থ ও ফজিলত সম্পর্কে জানা নেই। বাংলায় উচ্চারণ ও অর্থসহ আত্তাহিয়াতু সূরা তুলে ধরা হলো। 

আত্তাহিয়াতু সূরা

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

উচ্চারণ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস-সালাওয়াতু ওয়াত-ত্বায়্যিবাতু; আস-সালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ; আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিছ ছালিহীন; আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থ : ‘সব মৌখিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবি! আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো মাবুদ বা উপাস্য নাই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

আত্তাহিয়াতু সূরা পড়ার বিশেষ ফজিলত

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমরা যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পেছনে নামাজ পড়তাম; তখন বলতাম, ‘আসসালামু আলা জিবরিলা ওয়া মিকালা এবং আসসালামু আলা ফুলান ওয়া ফুলান’। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দিকে তাকালেন এবং বললেন-

আল্লাহ নিজেই তো সালাম, তাই যখন তোমরা কেউ সালাত/নামাজ আদায় করবে, তখন সে যেন বলে-

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ

কেননা, যখন তোমরা এটি বলবে তখন আসমান ও জমিনে থাকা আল্লাহর সব নেক বান্দার কাছে তা (শান্তি) পৌঁছে যাবে। আর এর সঙ্গে তোমরা (তাওহিদের কালেমার সাক্ষ্য) أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ এটিও পড়বে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, বৈঠকে বসে পড়ার জন্য তাশাহহুদ জানা না থাকলে তা শিখে নেয়া। বাংলা উচ্চারণ ঠিকভাবে না পারলে কোনো আরবি জানা লোকের কাছ থেকে তা শিখে নেয়া। কেননা এতে রয়েছে আল্লাহ এবং বান্দার জন্য শান্তি ও রহমত কামনার দোয়া, যা না পড়লে বঞ্চিত হবে মুমিন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে তাশাহহুদ শেখার তাওফিক দান করুন। তাশাহহুদ পড়ার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের শান্তি ও রহমত লাভের তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর আমল করতে তাওহিদের কালেমার সাক্ষ্য দেয়ারও তাওফিক দান করুন। আমিন।

আত্তাহিয়াতু কখন পড়তে হয়

প্রত্যেক পুরুষ এবং নারীর উপর নামাজ ফরজ ইবাদত। এ ইবাদতের ভেতরে এবং বাইরে কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো যথাযথভাবে আদায় করাও ফরজ। এর মধ্যে দুই রাকাআত পর পর বৈঠকে বসে আত্তাহিয়াতু পড়তে হয়। আত্তাহিয়াতু পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক।

আত্তাহিয়াতু পড়ার সময় আঙুল

আত্তাহিয়াতু পড়ার সময় আঙুল ইশারা করতে দেখা যায়। এটা কেন করা হয়? এই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো- সহিহ হাদিস রয়েছে, নবী (সা.) শাহাদাত আঙুল দিয়ে তাওহিদের ইশারা করতেন, তিনি শাহাদাত আঙুলটাকে নাড়াতেন। যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করতেন তখন রাসুল (সা.) ইশারা করতেন। সুতরাং বৈঠকের পুরা সময়টাই ইশারা করার বিষয়টি সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।

যদি কেউ এভাবে ইশারা করতে চান, তাহলে করতে পারেন। তবে এগুলো মুস্তাহাব বিষয়, এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করায় ভালো। এ সম্পর্কে অন্য এক হাদিসে এসেছে নবী (সা.) শাহাদাত আঙুল দিয়ে তাওহিদের ইশারা করতেন, তিনি শাহাদাত আঙুলটাকে নাড়াতেন। হাদীসমূহে শুধুমাত্র আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করার কথা এসেছে। আঙ্গুল নাড়ানোর কথা আসেনি। কিন্তু আঙ্গুল নাড়বে কি না? এ ব্যাপারে কোন স্পষ্ট নির্দেশনা নেই।

Next Post Previous Post