ফর্সা হওয়ার উপায় - (একদম প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াতে)

 

ফর্সা হওয়ার উপায়


সুন্দর, উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যসম্মত ফর্সা ত্বকের অধিকারী সকলেই হতে চায়। তাই নিজের ত্বককে আরো ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন বাজারজাত ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করে থাকে। তবে সেই সমস্ত ক্রিমে ত্বকের উপকারের চেয়ে অপকারই হয় বেশি। কেননা বাজারজাত ক্রিমগুলিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দিনের পর দিন ত্বকের ওপর ব্যবহার করার ফলে ত্বক ক্রমশ নষ্ট হয়ে যেতে থাকে এবং মুখের চামড়া দিন দিন পাতলা হয়ে যায়। 

এই কারণে নিজের ত্বককে আরো সুন্দর, উজ্জ্বল মোহময়ী করে তোলার জন্য প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। অতিরিক্ত সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থাকলে ত্বকের মেলানিন কালচে হয়ে যায়। তাই ত্বককে বাইরের দূষণ ও সূর্যের রশ্মি থেকে বাঁচাতে দৈনন্দিন যত্ন নেওয়া উচিত। পার্লারে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করালে তা সময় ও খরচা দুটিই ব্যয় করে। তাই ঘরে থাকা কয়েকটি জিনিসের মাধ্যমেই নিজের ত্বককে সহজেই ফর্সা করে তুলতে পারবেন। সুতরাং এবার আপনার হাতের মুঠোয় রয়েছে ফর্সা হওয়ার সহজ উপায়।  

ফর্সা হওয়ার উপায় 

লেবুর মাধ্যমে ত্বক ফর্সা করার উপায়

কি কি উপাদান লাগবে 

  • পাতিলেবু: একটি
  • মধু: দু চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • একটি পাতিলেবু নিন।
  • সেটিকে কেটে লেবু থেকে সমস্ত রস বের করে নিন।
  • সেখান থেকে দু চামচ লেবুর রস এক চামচ জলে মেশান।
  • এবার এই মিশ্রণটি ত্বকের দাগ ছোপ যুক্ত জায়গায় লাগান।
  • লেবুর রস মধুর সাথে সম পরিমাণে মিলিয়েও মুখে লাগাতে পারেন।
  • এটি ত্বক থেকে যাবতীয় নোংরা এবং রোদের পোড়া দাগ তুলতে সাহায্য করবে।
  • মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন তবে এই মিশ্রণটি মুখে লাগানোর আগে অবশ্যই কানের পিছনে কিংবা গলায় লাগিয়ে দেখে নেবেন। 
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

লেবুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের যেকোনো দাগ ছোপ কে পরিষ্কার করে ত্বককে স্বচ্ছ করে তোলে এবং ত্বকের শুষ্কতা কাটিয়ে তাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। লেবুর মধ্যে থাকা ব্লিচিং উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে দাগ ছোপ হীন করে তোলে। এছাড়াও রোদে পোড়া দাগও সহজেই হালকা করে। ত্বক যখনই উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যসম্মত হয়ে উঠবে তখনই তা ফর্সা হয়ে উঠবে।

ত্বক ফর্সা করতে হলুদের ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়ো: এক চামচ
  • লেবুর রস: ২ চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • কাঁচা হলুদ বেটে নিন কিংবা হলুদ গুঁড়ো এক চামচ নিন।
  • এবার তার সাথে দু চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিন।
  • লেবুর রস এবং হলুদ গুঁড়ো ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। মূলতঃ যেই সমস্ত জায়গাগুলিতে সূর্যের তাপে কালচে হয়ে গিয়েছে, সেই জায়গাগুলিতে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • এরপর ১৫ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে মুখটা ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে এক মাসের মধ্যে পার্থক্যটা নিজের চোখেই দেখতে পারবেন।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

হলুদের মধ্যে থাকা উপাদান ত্বকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি হিসেবে কাজ করে যা ত্বককে সমস্ত রকম জীবাণু থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও হলুদের মধ্যে থাকা উপাদান ত্বককে দ্রুত প্রক্রিয়ায় ফর্সা করে তোলে। এটি ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। এছাড়া ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ সরিয়ে দিয়ে ত্বককে সবসময় টান টান এবং উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে। হলুদ মুখে লাগানোর পাশাপাশি দৈনন্দিন খালি পেটে এক টুকরো করে খাওয়া গেলে তা শরীরকে ভিতর থেকে শুদ্ধিকরণ ঘটায়।

দুধ ব্যবহার করে ত্বককে আরো ফর্সা করে তুলুন

কি কি উপাদান প্রয়োজন
  • দুধ – ১ টেবিল চামচ
  • মধু – ১ চা চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • দুধ এবং মধুকে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে নিন।
  • এরপর ১৫ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • ত্বক যদি খুব শুষ্ক থাকে সে ক্ষেত্রে দুধের বদলে দুধের সর মধুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
  • এতে ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
  • সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই এই মিশ্রণটি মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

দুধের মধ্যে উপস্থিত প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ত্বকের রং কে ভিতর থেকে হালকা করে এবং ত্বককে বাইরে থেকে সুন্দর মসৃণ এবং আর্দ্র করে তোলে। দৈনিক দুধের ব্যবহারের ফলে ত্বক আরও লাবণ্যময় হয়ে ওঠে। এছাড়াও দুধ ত্বককে ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। এবং এটি ফর্সা হওয়ার একটি সহজ উপায়।

ত্বক ফর্সা করে তুলতে টমেটোর ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • টমেটো: দুটো
  • লেবুর রস: দুই চা চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • ২টি টমেটো মিক্সিতে বেটে নিয়ে মিশ্রন থেকে টমেটোর রস বের করে নেবেন।
  • তারপর পরিমাণমতো টমেটোর রস নিয়ে তার মধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করবেন।
  • টমেটো- লেবুর মিশ্রণটি সারা মুখে লাগাবেন।
  • মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করবেন।
  • তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন।
  • সপ্তাহে রোজ স্নানের আগে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে সান ট্যান বা ত্বকের দাগ ছোপ কমে যাবে।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

টমেটোর মধ্যে থাকা উপাদান গুলি ত্বকের দাগ ছোপ কমিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা এবং উজ্জ্বল করে তোলে। ত্বকের মধ্যে থাকা লাইকোপিন নামক উপাদান ত্বকে আর্দ্রতা প্রদান করে এবং ত্বকের ওপরে থাকা মৃত কোষগুলিকে সরিয়ে ত্বকের ট্যান দূর করতে সহায়তা করে।

ত্বক ফর্সা করতে দইয়ের ভূমিকা

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • টক দই: ২ টেবিল চামচ
  • মধু: ১ চা চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • টক দই এবং মধু ভালো করে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন।
  • এবার প্যাকটি পরিষ্কার ত্বকে লাগান।
  • ১৫ মিনিট প্যাকটি লাগিয়ে রাখুন।
  • অল্প শুকিয়ে এলে সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে রোজ এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এটি ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলতে সহায়তা করবে।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ফর্সা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে অন্যতম উপাদান দই। দই এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের ক্ষুদ্র লোমকূপে জমে থাকা ময়লাকে টেনে বার করে ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে। দৈনিকভাবে ত্বকে টক দই ব্যবহার করার ফলে ত্বকের রং হালকা হয় এবং তা ফর্সা হয়ে ওঠে। এছাড়া, যদি খাদ্য তালিকাতেও টক দই রাখা যায় তবে তা স্বাস্থ্যসম্মত হয়।

ত্বক পরিচর্যায় পেঁপের ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • পাকা পেঁপে: অর্ধেক
  • মধু: ১ টেবিল চামচ
  • লেবুর রস: হাফ টেবিল চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • অর্ধেক পাকা পেঁপেটি মিক্সিতে ভালো করে বেটে নিন।
  • এরপর মিশ্রন করা পাকা পেঁপেটির মধ্যে মধু এবং লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন।
  • এবার প্যাকটি মুখে গলায় ঘাড়ে হাতে ভাল করে লাগিয়ে নিন।
  • এবার ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • ১৫ মিনিট পর সাধারণ জল দিয়ে এগুলো ধুয়ে ফেলুন।
  • পাকা পেঁপে সরাসরি আপনি আপনার ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
  • দৈনিক স্নানের আগে হাতে মুখে একবার যদি পাকা পেঁপে ব্যবহার করে নিতে পারেন তাহলে সান ট্যানের সমস্যা কমবে এবং আপনার ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
  • পেঁপের এই প্যাকটি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • এছাড়া শুধু পাকা পেঁপে রোজ স্নানের আগে ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

পেঁপে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় ত্বকের উপযোগী সমস্ত উপাদান গুলি এর মধ্যে রয়েছে। এটি খাওয়া এবং এর পাশাপাশি মুখে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করার ফলে একটি সুন্দর উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যেতে পারে। পেঁপেতে এক ধরনের এনজাইম থাকে যেটি ত্বককে ফর্সা করে তুলতে সহায়তা করে। এছাড়াও পেঁপের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদানগুলি ত্বকের ওপর থেকে মৃত কোষগুলি সরিয়ে ত্বকের মধ্যে থাকা সুক্ষ ছিদ্র গুলিকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। যারা ব্রণ কিংবা ফুসকুড়ির সমস্যায় ভুগছেন কিংবা যাদের মুখে দাগ রয়েছে তাদের জন্য পেঁপে খুব উপকারী। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত যে ফাইন লাইনস রিংকেলস মুখে দেখা যায় সেগুলিকে পেঁপে কমাতে সহায়তা করে। পেঁপের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ত্বককে আর্দ্র এবং লাবণ্যময় করে তোলে। যার ফলে ত্বকের শুষ্কতা এটি দূর করে দেয়।

বেসন দিয়ে ত্বক ফর্সা করে তুলুন

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • বেসন: চার চামচ
  • কাঁচা দুধ: এক চামচ
  • লেবু: এক চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • বেসন, দুধ এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে পরিষ্কার হাতে আস্তে আস্তে মুখের ত্বকের ওপর মেসেজ করুন।
  • এরপর ১৫ মিনিটের জন্য এটি মুখে রেখে দিন।
  • কিছু সময় পর মিশ্রণটি শুকিয়ে যাবে, তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করবে।
  • সপ্তাহে একদিন এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
  • কিছুদিন ব্যবহারের ফলেই ত্বকে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

বেসন ত্বককে পরিষ্কার করে ত্বকে অতিরিক্ত তেলের পরিমাণ কমিয়ে ফর্সা করে তোলে। এছাড়াও এটি ব্রণ ও ফুসকুড়ি সারাতে একটি অনবদ্য উপাদান। মুখ থেকে চুলের পরিমাণ কমাতে কিংবা শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর করতে, ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা কমাতে, বার্ধক্যজনিত ত্বকের সমস্যা দূর করতে বেসনের ব্যবহার অনবদ্য। ফর্সা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে বেসন অন্যতম।

ত্বক পরিচর্যায় অ্যালোভেরার ভূমিকা 

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • অ্যালোভেরা জেল: ১ টেবিল চামচ
  • গোলাপ জল: কয়েক ফোঁটা
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • বাজার থেকে অ্যালোভেরা গাছের অংশ কিনে নিয়ে আসতে পারেন কিংবা দোকানে প্যাকেটজাত অ্যালোভেরা জেল পাওয়া যায় সেটিও ব্যবহার করতে পারেন।
  • তবে অ্যালোভেরার জেল যেটি গাছের থেকে পাওয়া যায় সেটি সরাসরি ত্বকে লাগালে অনেক সময় এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্যাকেটজাত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করাই ভালো।
  • অ্যালোভেরা জেল নিয়ে তার মধ্যে গোলাপ জল মিশিয়ে একটি হালকা মিশ্রণ তৈরি হবে।
  • সেটি পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • দিনে দুবার সকালে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে এই পদ্ধতিটি মেনে চলুন।
  • এতে এক সপ্তাহের মধ্যেই দেখতে পারবেন ত্বকে কিরূপ পরিবর্তন এসেছে।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

অ্যালোভেরা জেলের মধ্যে থাকা ভিটামিন, খনিজ উপাদানগুলি ত্বককে উপযুক্ত পুষ্টি জুগিয়ে ত্বককে আরো সুন্দর করে তোলে। এছাড়াও ব্রণ, পিম্পলস-এর মত গুরুতর সমস্যাগুলির সমাধান করে। ত্বকের রং হালকা করে আরো ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা অনেক দ্রুত ত্বককে ফর্সা করে তোলে। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত সমস্যা কিংবা পিগমেন্টেশনের মতন সমস্যা থাকলে সেই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে অ্যালোভেরা। 

ত্বক পরিচর্যায় মুলতানি মাটি

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • মুলতানি মাটি – চার চামচ
  • চন্দন গুঁড়ো – এক চামচ
  • গোলাপ জল – পরিমাণ মতো
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • মুলতানি মাটি, চন্দন গুঁড়ো এবং গোলাপ জল দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে পরিষ্কার ত্বকের ওপর, গলায়, ঘাড়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • এরপর পাখার তলায় কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • তারপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে একদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন।
  • এটি ত্বকের ফর্সাকারী প্যাক ছাড়াও ব্রণ ও এবং পিম্পল এর সমস্যার সমাধান করবে।
  • তবে খুব বেশি শুষ্ক ত্বক যাদের তারা গোলাপ জলের বদলে মধু দিয়ে মিশিয়ে মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

মুলতানি মাটিতে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় বিভিন্ন খনিজ ত্বককে ভেতর থেকে পরিশুদ্ধ করে তোলে। এছাড়াও তৈলাক্ত ত্বক ও ব্রণের সমস্যা থাকলে মুলতানি মাটির ব্যবহার করা আবশ্যক। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল সরিয়ে ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখে। বার্ধক্যজনিত কারণে যাদের ত্বক ভারসাম্য হারিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মুলতানি মাটি একটি অসাধারণ উপাদান। মূলতঃ তৈলাক্ত ত্বকের জন্যই মুলতানি মাটি খুব উপযোগী। ঘরোয়া পদ্ধতিতে মুলতানি মাটির প্যাক বানিয়ে ত্বককে আরও ফর্সা করে তুলুন। 

ত্বককে ফর্সা করে তুলতে মধুর ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • মধু – দু’চামচ
  • পাতিলেবু – হাফ চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • মধু এবং পাতিলেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • মিশ্রণটি এবার পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে নিন।
  • ১৫ থেকে ২০ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • দুধ, মধু, বেসন দিয়ে প্যাক তৈরি করেও মুখে লাগাতে পারেন।
  • এই প্যাকটি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করুন।
  • দু তিনবার ব্যবহারের পরেই তফাৎ বুঝতে পারবেন।
  • সান ট্যান এবং যেকোন দাগ ছোপ অনেক হালকা করে দেবে এই মিশ্রণটি।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ত্বকের শুষ্কতা কাটিয়ে ত্বককে আর্দ্র করে উপযুক্ত ময়েশ্চার প্রদান করে থাকে মধু। এছাড়াও এর মধ্যে উপস্থিত ব্লিচিং উপাদান ত্বককে ফর্সা করে তুলতে এবং ব্রণ কিংবা পিম্পলের দাগ কে হালকা করতে সহায়তা করে। তবে খুব বেশি সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে মধু সহনশীল নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে মধু ব্যবহার করার আগে তা গলায় কিংবা হাতের কনুইতে একবার লাগিয়ে দেখবেন ত্বকে কোনো রকম অ্যালার্জি হয় কিনা।

চন্দন ব্যবহার করে ত্বককে ফর্সা করে তুলুন

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • চন্দন কাঠ বা চন্দনের গুঁড়ো – এক চামচ
  • দুধ – দু চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • কাঁচা দুধের মধ্যে চন্দনের গুঁড়ো নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখের ওপর পুরু ভাবে লাগিয়ে নিন।
  • ১০ থেকে ১৫ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে একদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এটি ত্বককে দ্রুত উজ্জ্বল করে তুলবে।
  • এছাড়াও চন্দনের গুঁড়োর সাথে মধু, কমলালেবুর খোসা, দই ইত্যাদি দিয়ে প্যাক তৈরি করে একই পদ্ধতিতে মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

মুখের মধ্যে থাকা যে কোন ধরনের দাগ ছোপ কিংবা কাটা দাগ সবকিছু নিরাময়ে চন্দনের ব্যবহার অতুলনীয়। চন্দনের মধ্যে এক ধরনের শীতল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বককে ভেতর থেকে পরিচ্ছন্ন এবং সতেজ করে তোলে। এছাড়াও চন্দনের মধ্যে থাকা উপাদানগুলি ত্বককে ব্রণ, ব্রণের দাগ, বার্ধক্য জনিত দাগ, সান ট্যান থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে দাগহীন করে উজ্জ্বল করে তোলে।

শশা

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • শসার রস – ৩ টেবিল চামচ
  • লেবুর রস – ১ টেবিল চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • শসার রস এবং লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট।
  • কিছুক্ষন মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • মুখে কোন প্রকার সাবান দেবেন না।
  • সপ্তাহে রোজই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বক দাগহীন হয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
  • এক সপ্তাহেই তফাৎটা বুঝতে পারবেন।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

শসার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের নির্জীবতা সরিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বলতা প্রদান করে। শশা সবচেয়ে ভালো টোনারের কাজ করে। গরমের দিনে বাইরে থেকে বেরিয়ে এসে শসার রস মুখে লাগিয়ে নিলে বাইরের ক্লান্তিটা মুখ থেকে সরে যায় এবং ত্বক তার জৌলুস ফিরে পায়। 

ত্বক ফর্সা করতে আলুর ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • আলুর রস – ৩ টেবিল চামচ
  • লেবুর রস – ১ টেবিল চামচ
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • আলু এবং লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • মিশ্রণটি এবার পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে।
  • ১৫ থেকে ২০ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে দুদিন এই মিশ্রণটি মুখে ব্যবহার করুন।
  • এটি ব্যবহারের ফলে খুব দ্রুত ত্বকের যেকোনো দাগ হালকা হবে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। ফর্সা হওয়ার অন্যতম সহজ উপায় আলুর ব্যবহার।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

আলুর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তোলে। এটি ত্বকের রিংকেলস কমিয়ে ত্বককে জীবন্ত করে তোলে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের ওপর থেকে যে কোনো রকমের কালো দাগ, ব্রণের দাগ অল্প সময়ে পরিষ্কার করে দিতে পারে। এছাড়াও চোখের তলায় কালো দাগ খুব সহজেই আলু ব্যবহার করে পরিষ্কার করা যায়। এটি ত্বকে রক্ত সঞ্চালন এর বৃদ্ধি ঘটায়। ত্বকের শুষ্কতা থেকে বাঁচিয়ে ত্বককে আরও আর্দ্র করে তোলে। এর পাশাপাশি ত্বক থেকে সানবার্ন দূর করতেও এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। 

ডাবের জল

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • ডাবের জল – পরিমাণ মতো
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • পরিমাণ মতো ডাবের জল নিয়ে মুখ এবং ঘাড় এ ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • জলটি লাগানোর পর হালকা হাতে একটু মেসেজ করে নিন।
  • তারপর আরেকবার ত্বকের ওপরে ডাবের জল লাগিয়ে নিন।
  • এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে তিনদিন স্নানের আগে কিংবা পরে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • দু সপ্তাহ ব্যবহারের পরেই ত্বকের মধ্যে তফাৎটা বুঝতে পারবেন। যে ত্বককে আরো কত উজ্জ্বল এবং দাগহীন করে তুলেছে ডাবের জল।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ত্বক ফর্সা করে তুলতে এবং ত্বক থেকে যেকোন কালো দাগ দূর করতে ডাবের জল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। বসন্তের দাগ কিংবা পোড়া দাগ, ব্রণের দাগ বা যে কোন ধরনের ত্বকে দাগের সমস্যা কিংবা বার্ধক্যজনিত রিংকেলস ফাইন লাইনস এর সমস্যা দূরীকরণে ডাবের জলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দৈনিক ডাবের জল ব্যবহারের ফলে ত্বক ফর্সা এবং দাগহীন হয়ে ওঠে। ডাবের জলের মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টিকর করে তোলে।

মুসুর ডাল

কি কি উপাদান প্রয়োজন 
  • মুসুর ডাল – দু চামচ
  • মধু – এক চামচ
  • লেবুর রস – কয়েক ফোঁটা
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
  • আগের দিন রাতে মুসুর ডাল জলে ভিজিয়ে রাখবেন।
  • সকালবেলা উঠে মুসুর ডাল বেটে নেবেন। এবার মিশ্রণটির মধ্যে মধু এবং লেবু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করবেন।
  • পরিষ্কার ত্বকে মিশ্রণটি লাগিয়ে নেবেন।
  • ১৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন।
  • এরপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন।
  • সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এই প্যাকটির প্রথম ব্যবহার থেকেই ত্বকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
  • এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বককে আরও সুন্দর করে তুলবে।
কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

মুসুর ডালের মধ্যে উপস্থিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও মুসুর ডালের মধ্যে থাকা প্রোটিন উপাদানগুলি ত্বককে পুষ্টি জুগিয়ে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
Next Post Previous Post