মুখের কালো দাগ দূর করার উপায় এবং দাগের কারণ

 

মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়


মুখের কালো দাগ নিয়ে অনেকেই প্রচুর পরিমানে হতাশায় আছেন। কিন্তু আপনি যদি কিছু উপায় অবলম্বন করেন তাহলে আপনার মুখে কোনো দাগেই থাকবে না। তার আগে আপনাকে জানতে হবে ঠিক কি কারণে এমন দাগ হয়। আজকের এই পোস্টে আমরা এটার বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

যেসব কারণে মুখের মধ্যে কালো দাগ হয় 

রোদ

ত্বকের নিদাগ উজ্জ্বলতার সবচেয়ে বড়ো শত্রু হচ্ছে সূর্যের চড়া আলো। রোদে বেরনোর আগে অতি অবশ্যই মুখসহ শরীরের সব খোলা অংশে সানস্ক্রিনের প্রলেপ লাগান। সাঁতার কাটার সময় ব্যবহার করুন ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন।

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা 

হরমোনের অতিরিক্ত বেশি বা কম ক্ষরণের জন্য আপনার ত্বকে গাঢ়রঙের দাগ-ছোপ পড়তে পারে। প্রেগন্যান্সি বা মেনোপজ়ের কারণেও হরমোনের স্তরে ভারসাম্যের অভাব দেখা দেয়। এর ফলে মেলানিনের উৎপাদনেও সাম্য থাকে না। ফলে মুখে, কাঁধে, গলায় ছোপ-ছোপ দাগ দেখা দিতে পারে।

ত্বককে রোমহীন রাখার অনন্ত প্রচেষ্টা 

বহু মহিলাই ত্বকের বাড়তি রোমের আস্তরণ সরিয়ে ফেলতে চান। সে কারণে রোম তোলার ক্রিম, টুইজ়ার, ওয়্যাক্স ইত্যাদি নানা পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু নিরন্তর এই প্রচেষ্টা চালাতে গিয়ে ত্বকের স্পর্শকাতরতা বাড়ে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে দাগ-ছোপের আশঙ্কাও।

ব্রণ বা চোট-আঘাতের দাগ 

ব্রণ বা ফোড়া হলে খুঁটবেন না, হাত লাগাবেন না বেশি। তা হলে কিন্তু দাগ চট করে মিলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।

মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়

আলু

আলুতে থাকে ক্যাটেকোলেজ নামক একধরনের উপাদান, যা ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং রোদে পোড়াভাব দূর করতে সাহায্য করে। কখনো কখনো মেছতার কঠিন দাগও দূর করতে পারে আলু। এ জন্য খোসা ছাড়ানো আলু একটু মোটা করে টুকরো করে নিতে হবে। টুকরোগুলো সরাসরি পানিতে না ধুয়ে আলু কাটার আগেই ধুয়ে নেওয়া ভালো। এবার হালকা ভেজা ত্বকে আলুর টুকরোগুলো চক্রাকারে ঘষতে হবে। মনে রাখতে হবে, খুব জোরে ঘষা যাবে না। এক মাস প্রতিদিন দুবার এ পদ্ধতিতে আলু ব্যবহার করলে দাগছোপ চলে যাবে। মাঝেমধ্যে এর সঙ্গে লেবুর রসও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সরাসরি মাঠের আলু ব্যবহার করতে পারলে দ্রুত কাজ হবে। 

কমলালেবুর খোসা

কমলালেবুর খোসায় থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি। ভিটামিন সিও ত্বকের দাগছোপ দূর করতে সাহায্য করে। কমলালেবুর খোসা স্ক্রাব হিসেবেও ভালো। আর এই স্ক্রাব ত্বকের নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। কমলালেবুর খোসা সরাসরি ব্লেন্ড করে বা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে স্ক্রাব তৈরি করা যায়। ভালো ফল পেতে এর সঙ্গে কিছুটা লেবুর রস, দুধ ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। এ স্ক্রাব মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। দিনে একবার এটি ব্যবহার করলে দাগছোপ দূর হওয়ার সঙ্গে ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল হবে। 

লেবু

লেবুতেও রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি। তবে লেবুর সাইট্রিক অ্যাসিড প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে দারুণ কার্যকর। তাই ত্বকের দাগছোপ দূর করতে পাতিলেবু বেশ কার্যকর। এ জন্য একটি বাটিতে লেবুর রস নিয়ে পরিষ্কার তুলো সরাসরি এ রসে ভিজিয়ে দাগের ওপর লাগাতে হবে। যদি ত্বক বেশি সেনসিটিভ হয়, তবে সামান্য পানি মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। অথবা লেবুর রসের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে নিলেও চলবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। 

চন্দন

অধিকাংশ সময় ব্রণ চলে গেলেও তার দাগ থেকে যায়। সঠিক সময় ব্যবস্থা না নিলে দাগ স্থায়ী হয়ে যেতে পরে। এ ধরনের দাগছোপের জন্য চন্দন ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বক উজ্জ্বল করতেও সাহায্য করে। অনেক সময় ব্রণ হওয়া প্রতিরোধ করে এবং দাগ ত্বকে বসতে দেয় না। এ ক্ষেত্রে ২ টেবিল চামচ চন্দনগুঁড়া কিছুটা গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে। মুখের ত্বকে লাগিয়ে। আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে একবার বা দুবারের বেশি মিশ্রণটি ব্যবহার করা উচিত নয়।
Next Post Previous Post