পাথরকুচি পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা

 

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা অপরিসীম। পাথরকুচি ঔষধি উদ্ভিদ। দেড় থেকে দুই ফুট উঁচু। পাতা মাংসল ও মসৃণ, আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো। চারপাশে আছে ছোট ছোট গোল খাঁজ। এই খাঁজ থেকে নতুন চারার জন্ম হয়। অনেক সময় গাছের বয়স হলে ওই গাছের খাঁজ থেকে চারা গজায়। পাতা মাটিতে ফেলে রাখলেই অনায়াসে চারা পাওয়া যায়। কাঁকর মাটিতে সহজেই জন্মে, তবে ভেজা-স্যাঁতসেঁতে জায়গায় দ্রুত বাড়ে। পাতা থেকে এ গাছ জন্ম নেয়। 

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা

শিশুদের পেট ব্যথায় 

শিশুর পেটব্যথা হলে, ৩০-৬০ ফোঁটা পাথর কুচির পাতার রস পেটে মালিশ করলে ব্যথার উপশম হয়। তবে পেট ব্যথা নিশ্চিত হতে হবে।

সর্দি 

সর্দি পুরান হয়ে গেছে, সেই ক্ষেত্রে এটি বিশেষ উপকারী। পাথরকুচি পাতা রস করে সেটাকে একটু গরম করতে হবে এবং গরম অবস্থায় তার সাথে একটু সোহাগার খৈ মেশাতে হবে। তিন চা-চামচের সাথে ২৫০ মিলিগ্রাম যেন হয়। তা থেকে দুই চা চামচ নিয়ে সকালে ও বিকেলে দুবার খেলে পুরান সর্দি সেরে যাবে এবং সর্বদা কাশি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

কিডনির পাথর অপসারণ 

পাথরকুচি পাতা কিডনি এবং গলগণ্ডের পাথর অপসারণ করতে সাহায্য করে। দিনে দুবার ২ থেকে ৩টি পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খান।

পেট ফাঁপা 

অনেক সময় দেখা যায় পেটটা ফুলে গেছে, প্রসাব আটকে আছে, আধোবায়ু, সরছে না, সেই ক্ষেত্রে একটু চিনির সাথে এক বা দুই চা-চামচ পাথর কুচির পাতার রস গরম করে সিকি কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এর দ্বারা মূত্র তরল হবে, আধো বায়ুরও নিঃসরণ হবে, ফাঁপাটাও কমে যাবে।

মেহ 

সর্দিজনিত কারণে শরীরের নানা স্থানে ফোঁড়া দেখা দেয়। যাকে মেহ বলা হয়। এ ক্ষেত্রে পাথরকুচির পাতার রস এক চামুচ করে সকাল-বিকেল একসপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়।

রক্তপিত্ত 

পিত্তজনিত ব্যথায় রক্তক্ষরণ হলে দু’বেলা এক চা-চামচ পাথর কুচির পাতার রস দুদিন খাওয়ালে সেরে যাবে।

মৃগী 

মৃগী রোগাক্রান্ত সময়ে পাথর কুচির পাতার রস ২-১০ ফোঁটা করে মুখে দিতে হবে। একটু পেটে গেলেই রোগের উপশম হবে।

ত্বকের যত্ন 

পাথরকুচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সাথে সাথেই এর মধ্যে জ্বালাপোড়া কমানোর ক্ষমতা থাকে। যারা ত্বক সম্বন্ধে সচেতন, তারা পাথরকুচি পাতা বেটে ত্বকে লাগাতে পারেন। ব্রণ ও ফুস্কুড়ি জাতীয় সমস্যাও দূর হয়ে যাবে।

কাটাছেঁড়ায় 

টাটকা পাতা পরিমাণ মতো হালকা তাপে গরম করে কাটা বা থেঁতলে যাওয়া স্থানে সেক দিলে আরাম পাওয়া যায়।

পাইলস 

পাথরকুচি পাতার রসের সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

জন্ডিস নিরাময়ে 

লিভারের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করতে তাজা পাথরকুচি পাতা ও এর জুস অনেক উপকারী।

কলেরা, ডাইরিয়া বা রক্ত আমাশয়

তিন মিলিলিটার পাথরকুচি পাতার জুসের সাথে ৩ গ্রাম জিরা এবং ৬ গ্রাম ঘি মিশিয়ে কয়েক দিন খেলে এসব রোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়।

শরীর জ্বালাপোড়া

দু-চামচ পাথর কুচি পাতার রস, আধা কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে দুবেলা খেলে উপশম হয়।

পোকা কামড় 

বিষাক্ত পোকায় কামড়ালে এ পাতার রস আগুনে সেঁকে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

উচ্চ রক্তচাপ 

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং মুত্রথলির সমস্যা থেকে পাথরকুচি পাতা মুক্তি দেয়।

কাটা বা থেঁতলে যাওয়া

টাটকা পাতা পরিমাণমতো হালকা তাপে গরম করে কাটা বা থেঁতলে যাওয়া স্থানে সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।

রক্তপিত্ত 

পিত্তজনিত ব্যথায় রক্তক্ষরণ হলে দু'বেলা এক চা চামচ পাথরকুচি পাতার রস দু'দিন খেলে সেরে যাবে।

পাথরকুচি পাতা কিভাবে খেতে হয়?

সৌন্দর্যবর্ধনকারী উদ্ভিদ ছাড়াও পাথরকুচি উদ্ভিদকে ঔষুধি উদ্ভিদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।বহুকাল আগে থেকে পাথরকুঁচিকে ঔষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। কিন্ত আপনি কি জানেন ঠিক কোন রজার সমস্যায় আপনি  পাথরকুঁচিকে খেতে পারবেন ?কিংবা কিভাবে পাথরকুচি খাওয়া যায় ?চলুন জেনে নেই পাথরকুচি কিভাবে খাওয়া হয় 

  • আপনার যদি আপনার শরীরের মধ্যে কোন অংশ জ্বালাপোড়া করে থাকে তাহলে আপনি পাথরকুচির পাতা নিয়ে তা গরম পানি দিয়ে তা ভালো করে ধুয়ে নিবেন। পরবর্তীতে আপনি তা বেটে দিয়ে আপনি নিয়মিত খাবেন। এভাবে আপনি খুব শীগ্রই এই সমস্যা সমাধান করতে পারবেন।

  • আপনি যদি কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি দিনে দুইবার পাথরকুচির পাতা চিবিয়ে তার রস খাবেন। তাহলে খুব ধীরে ধীরে আপনার কিডনির পাথর অপসারণ করতে পারবেন।

  • আপনি যদি গলগন্ড রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি প্রতিদিন এই পাথরকুচির পাতার রস আপনি দুইবেলা খেতে পারেন এতে বেশ উপকার পাবেন।

  • সর্দি জনিত সমস্যায় আপনি নিয়মিত পাথরকুচি পাতার রস বেটে তার সাথে  মধু নিয়ে নিয়মিত খেলে বেশ উপকার পাবেন।

  • জন্ডিস প্রতিরোধে আপনি নিয়মিত পাথরকুচি পাতা বেটে তার রস আপনি নিয়মিত খেলে অল্প সময়ের মধ্যে বেশ উপকার পাবেন।

পাথরকুচি পাতার অপকারিতা

অতিরিক্ত পাথরকুচি পাতার রস খেলে মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাথরকুচি পাতার রস খেলে পেটের নানাবিধ সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। পাথরকুচি পাতার রস খেলে পিত্তথলির সমস্যা হতে পারে। পাথরকুচি পাতার রস খেলে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পাথরকুচি পাতার রস খেলে কলেরা কিংবা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

Next Post Previous Post