কোন খাবার খেলে দ্রুত ওজন কমে

শরীরের ওজন ঝরাতে হলে খাবারের তালিকায় প্রতিদিন সালাদ রাখুন। টমেটো, বিট, বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম এবং শসা দিয়ে বানান সালাদ। এগুলোতে ক্যালরি কম থাকে। বিস্কুট বা উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন স্ন্যাকস চিবানোর পরিবর্তে আঙুর, আপেল বা কমলালেবুর মতো ফল খান। যা আপনাকে শক্তি জোগাবে। পেটও ভরে থাকবে। আমোন্ড খেতে পারেন। এটি হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন দই। গরুর দুধ থেকে তৈরি দইয়ে প্রতি ১০০ গ্রামে ৫৬ ক্যালরি থাকে। দই হলো প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনের উৎস। এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর প্রোবায়োটিক, প্রোটিন, জিঙ্ক ও ফসফরাসের মতো উপাদান।

অঙ্কুরিত ছোলা খেতে পারেন। এটা ভিটামিন ও ফাইবারের উৎস। পেট ভর্তি থাকে। শরীরের পক্ষেও উপকারী। পানি বেশি করে খান। পানিতে ক্যালরি থাকে না। হজমেও সাহায্য করে। এর পাশাপাশি নিজের পেট ভর্তি লাগে।

ওজন কমাতে হলে ডিম পাতে রাখতেই হবে। ডিমে আছে জরুরি অ্যামিনো অ্যাসিড, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়া ওজন কমাতে অমলেট বা ডিমের কারি নয়, বরং ওজনে কমাতে পোচ, সিদ্ধ ডিম বা হাফ বয়েল খান।

মাছের তেলের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও মাছের মধ্যে থাকা প্রোটিন আপনার শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতেই দেবে না। সামুদ্রিক মাছও বেশ ভালো। মুরগির মাংস খেলে ওজন কমে। শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণেরও জোগান দেয়। রেড মিটের মতো কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ভয়ও নেই। ফলে ওজন কমে।

প্রতিদিন ডায়েটে ডিম, সবুজ শাক-সবজি, মাছ, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিদ্ধ আলু, মুরগির মাংস, ডাল, পনির, বাদাম খাবার রাখুন। প্রোটিন ও ফাইবার উপাদান থাকায় এসব খাবার খেলে দ্রুত শরীরের ওজন কমবে।

কোন খাবার খেলে দ্রুত ওজন কমে 

ডিম 

অনেকেই হয়তো অবাক হয়ে চিন্তা করছেন ডিম কিভাবে ওজন কমাতে সহায়ক হতে পরে। অবাক হবার কিছু নেই। ডিম হচ্ছে প্রোটিনে সমৃদ্ধ এমন একটি খাবার যা অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকতে সাহায্য করে যার কারণে ক্ষুধা ভাব কম হয়। প্রতিদিন সকালে যদি ডিম ডায়েটে যোগ করা যায়, তাহলে আপনি সারাদিনে তুলনামূলক কম ক্যালোরি গ্রহণ করবেন যা ওজন কমাতে সহায়ক।

পেস্তা বাদাম

আপনার ডায়েট প্ল্যানে স্ন্যাকসের লিস্টে চোখ বন্ধ করে যোগ করতে পারেন এই পেস্তা বাদাম। পেস্তা বাদাম হচ্ছে পারফেক্ট স্ন্যাক, কারণ এতে আছে হেলদী ফ্যাট, প্রোটিন এবং ডায়েটারি ফাইবার (Dietary fiber) যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তবে ফ্যাটের কথা শুনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই ফ্যাট হচ্ছে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (Unsaturated Fat) যা ব্রেন এবং হার্টকে সুস্থ রাখে।

মাশরুম

নিয়মিত মাশরুম খাবার মাধ্যমে আপনি আপনার অতিরিক্ত চর্বি কাটিয়ে উঠতে পারেন। গরু বা অন্য চর্বিযুক্ত মাংসের পরিবর্তে মাশরুম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি যেমন স্বাস্থ্যকর তেমনি এতে খুব কম ক্যালোরি রয়েছে। এক কাপ মাশরুমে ৪৪ ক্যালোরি রয়েছে।

জাম্বুরা 

আমরা অনেকেই হয়তো জানি না জাম্বুরা ওজন কমানোর জন্য উপকারী। জাম্বুরাতে থাকা ফাইটোকেমিকল্স্ ইনসুলিন (Phytochemicals Insulin) লেভেল কমায় এবং এটি শরীরের ক্যালোরিকে চর্বিতে রূপান্তরিত করার পরিবর্তে এনার্জিতে রূপান্তর করে। বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের পূর্বে অর্ধেক জাম্বুরা অথবা দিনে ৩ বার জাম্বুরার জুস পানের মাধ্যমে ১২ সপ্তাহে ৪ পাউন্ডের মতো ওজন কমানো সম্ভব। তাহলে আর দেরি কেন? আজ থেকেই আপনার ডায়েট প্ল্যানে যোগ করুন জাম্বুরা এবং দেখুন এর জাদু।

গ্রিন টি

গ্রিন টি ওজন কমাতে খুবই সহায়ক একটি পানীয়। গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিন (catechin) নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্যাট বার্ণ করে। এটি অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, গ্রিন-টি এক দিনে ৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করে। তার মানে নিয়মিত গ্রিন টি পানের মাধ্যমে বছরে ৭ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব। গ্রিন টি পান করার উপকারিতা হিসেবে ওজন কমানোর পাশাপাশি আরেকটি হেল্থ বোনাসও পাওয়া যাবে। আর তা হলো এটি LDL cholesterol কমায় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

পানি

দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে পানি হতে পরে আপনার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রতিদিন সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের পূর্বে ২ গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করলে বছরে ১৭,৪০০ এক্সট্রা ক্যালোরি কমানো সম্ভব। তার মানে বছরে ৫ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমাতে পারেন রেগ্যুলার পানি পানের মাধ্যমে।

অলিভ অয়েল

আপনি আপনার নিয়মিত খাদ্য অভ্যাসের সাথে অলিভ অয়েল যোগ করেও কমাতে পারেন অতিরিক্ত ওজন। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল শরীরের জন্য উপকারী। এতে আছে এক প্রকার মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (monounsaturated fat) যা ক্যালোরি বার্ণ করতে খুবই উপকারী। রেগ্যুলার

সালাদের সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে আপনি যেমন সালাদের গুণকে বাড়িয়ে নিতে পারেন কয়েক গুণ, তেমনি ওজনটাও রাখতে পারেন নিয়ন্ত্রণে।

ব্রোকলি

ব্রোকলিতে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেলস। এতে অনেক কম ক্যালোরি রয়েছে। ব্রোকলি ওজন বাড়ানোর জন্য দায়ী দুইটি জিনিসকে প্রতিহত করে। একটি হচ্ছে শারীরিক ক্ষুধা এবং অপরটি খাওয়ার ইচ্ছা। তাই আপনার ডায়েট প্ল্যানে ব্রোকলি যোগ করার মাধ্যমে ওজন কমাতে পারেন সহজেই।

রান্নার সঙ্গে রুচির যোগাযোগ

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ যদি সপ্তাহে অন্তত ছয়বার রাতের খাবার নিজে রান্না করেন, তাহলে তার কম ক্যালরি ও চর্বি খাওয়া হবে।

কারণ, সরাসরি রান্নায় জড়িত থাকার কারণে খাওয়ার প্রবণতা কমে আসে। নিয়মিত রান্না করলে শরীরে সেরোটোটিন নামে একধরনের হরমোন তৈরি হয়, যা বিষণ্নতা কমাতে ও উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। 

দুপুরের খাবারের বিরতি উৎপাদনশীলতা বাড়ায়

সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান টার্কের একটি গবেষণায় জানা গেছে, ২০ শতাংশ কর্মী মনে করেন, নিয়মিত মধ্যাহ্নভোজের পর বিরতি নিলে বস তাঁদের সম্পর্কে খারাপ ভাবেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের একটি গবেষণা বলছে, মধ্যাহ্নভোজের বিরতি কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ায় ও কাজে মনোযোগী করে।

কর্মক্ষেত্রে কাজের গতি বাড়াতে পারে সঠিক খাবার। পাস্তা, রুটি, সিরিয়াল ও সোডার মতো খাবার শরীরে দ্রুত গ্লুকোজ তৈরি করে, যা কাজের গতি বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে বেশি চর্বিযুক্ত খাবার পাকস্থলীর কাজ বাড়িয়ে দেয় এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের মাত্রা কমায়। এ ধরনের খাবার ক্ষুধা বাড়ায়।

নবীনতর পূর্বতন