তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার কার্যকরী কিছু উপায়

তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়

তৈলাক্ত ত্বকে খুব সহজে ধুলোবালি আটকে যায় এবং অতিরিক্ত তেল মুখের লোমকূপগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এতে করে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে ব্রণ হওয়ার প্রকোপ বাড়ে। কিছু ক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার না রাখায় ব্রণ দেখা দিতে পারে। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হলে তা সারিয়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে। 

তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়

তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে লেবু সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া উপাদান, লেবুতে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড তৈলাক্ত ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে ত্বককে ব্রণ হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। মধুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হতে বাধা প্রমাণ করে, ত্বকের ময়েশ্চারাইজারের স্তর ঠিক রাখে ও ত্বক উজ্জ্বল করে তোলে। একটি সতেজ লেবু থেকে এক টেবিল চামচ রস নিয়ে সাথে সমপরিমাণ মধু নিয়ে একটি পাত্রে মেশান। দেখবেন এই দুই উপাদান মিলেমিশে বেশ গাঢ় লিকুইড আকার ধারণ করবে। এবার এই লিকুইড আপনার ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার ত্বক ধুয়ে ফেলুন।

এই প্যাকটি ব্যবহার করার পর আপনার ত্বকে ব্রণ কমে আসবে, ব্রণের দাগ হালকা হতে শুরু করবে এবং আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে। তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ প্রতিরোধে এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন।

দই ত্বক নরম ও নমনীয় রাখে আর বেসন ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বকের উজ্জলতা ধরে রাখে। এবং এই দুই উপাদান একসাথে হয়ে তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ সারাতে ভালো কাজ করে। দুই টেবিল চামচ বেসন ও এক টেবিল চামচ দই নিয়ে একটি পাত্রে চামচের সাহায্যে পেস্ট বানান। পেস্ট হয়ে আসলে এতে দুই ফোটা মধু ও এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে নিন।

এবার প্যাকটি আপনার মুখে ও গলায় সুন্দর করে লাগিয়ে নিন এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর এটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি হাতের সাহায্যে লাগিয়ে প্যাকটি ত্বক থেকে লুজ করে নিন। এবার হালকা ঘষে প্যাকটি মুখ থেকে ঝরিয়ে ফেলুন। এতে করে ত্বকের ডেড সেল উঠে আসার সাথে ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে আসবে। সবশেষে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ দিয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন।

লেবুর রস ও মধুর প্যাক

লেবুতে সাইট্রিক এসিড নামে এমন একটি উপাদান আছে, যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে ব্রণের সমস্যা অনেকাংশে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এ ছাড়া লেবুর রস ত্বকের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর করতে বেশ কার্যকর। আর মধু হলো একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা ত্বকের ভেতর থেকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। ব্রণ সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতাও বৃদ্ধি করে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

একটি পরিষ্কার পাত্রে এক চামচ লেবুর রস ও সমপরিমাণ মধু নিন। একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। প্রথমে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন এবং তার পর মুখ ও ঘাড়ের অংশে পেস্টটি লাগিয়ে নিন। কটন বল ব্যবহার করতে পারেন মিশ্রণটি লাগাতে। ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ও ঘাড় ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন ব্যবহারে দ্রুত ও কার্যকর ফল পাবেন।

বেসন ও টক দইয়ের প্যাক

বেসন ও টক দই, দুটি উপাদানই আপনি খুব সহজে হাতের কাছে পাবেন। বেসনে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও ভিটামিন আছে, যা তৈলাক্ত ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে ত্বককে আরো উজ্জ্বল ও দ্যুতিময় করে। টক দইয়ে আছে ভিটামিন এ ও সি, যা ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে নরম ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

একটি পাত্রে দুই চা চামচ বেসন ও এক চা চামচ টক দই নিন এবং ভালো করে নাড়ুন। মিশ্রণটিতে দুই ফোঁটা লেবুর রস ও এক চিমটি হলুদ গুঁড়া দিন। তার পর তৈরি করা মিশ্রণটি মুখ ও ঘাড়ে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ২০-৩০ মিনিট পর হালকা উষ্ণ পানির ঝাপটা দিয়ে শুকিয়ে যাওয়া প্যাকটি ভিজিয়ে নিন। আলতোভাবে ঘষে ধীরে ধীরে প্যাকটি উঠিয়ে নিন, যাতে আপনার ত্বকে জমে থাকা মৃত কোষগুলো দূর হয়ে যায়। সবশেষে ঠান্ডা পানি দিয়ে পুরো মুখ ও ঘাড় ধুয়ে নিন। সপ্তাহে অন্তত দুবার ব্যবহার করুন। তবে ব্রণ কমে এলে ১৫ দিন পরপর ব্যবহার করতে পারেন।

Next Post Previous Post