মাথা চুলকানি দূর করার সর্বোত্তম উপায়

মাথা চুলকানি দূর করার উপায়

বিভিন্ন কারণে মাথার ত্বক চুলকায়। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাথার ত্বকে সোরিয়াসিস ও ফাঙ্গাল ইনফেকশন। বিশেষ কোনো কেমিক্যালের প্রভাবে অ্যালার্জি হতে পারে। এসব সমস্যা এড়াতে নিচের পদ্ধতিগুলো চেষ্টা করতে পারেন। আশা করছি মাথা চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন।

মাথা চুলকানোর কারণ

বিভিন্ন কারণে মাথা চুলকানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ হলো:

  • অতিরিক্ত খুশকি হলে মাথা চুলকাতে পারে।
  • আপনার ব্যবহার করা কোনো ব্যবহার করা পণ্যে অ্যালার্জিক হলে, তা থেকে চুলকানি হতে পারে।
  • মাথার ত্বকে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে মাথা চুলকাতে পারে।  
মাথা চুলকানি দূর করার উপায়

টি ট্রি অয়েল

টি ট্রি অয়েলও অ্যান্টি ফাঙ্গাল, অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল, অ্যান্টিসেপটিক গুণসমৃদ্ধ। এটা প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। তবে সরাসরি টি ট্রি অয়েল মাথায় লাগাবেন না। হেয়ার মাস্কে ১০ থেকে ১২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করুন। চাইলে শ্যাম্পুর মধ্যেও মেশাতে পারবেন। চুলকানি কমাতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন।

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরার পাতার মাঝের নরম শাঁসটুকু বের করে নিন। আঙুল দিয়ে মাথায় ভালো করে ম্যাসাজ করে আধা ঘণ্টা রাখুন। তারপর ঠান্ডা পানিতে মাথা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুইবার এই ট্রিটমেন্ট করতে পারেন।

লেবুর রস

মাথায় যে তেলটা ব্যবহার করেন তাতে লেবুর বস মিশিয়ে নিয়ে ব্যবহার করুন। চাইলে হেয়ার মাস্ক বা প্যাকেও মিশিয়ে নিতে পারেন। এটা মাথায় লাগানো যায় সপ্তাহে দুই-তিনবার। ব্যবহারের পর অবশ্যই শ্যাম্পু করে নেবেন।

নিমের প্যাক 

খুশকির সমস্যা দূর করতে নিম বেশ কার্যকরী। ১০/১২টি নিম পাতা বেটে নিন। এর সঙ্গে মেশান ৪ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল। এবার এই মিশ্রণ ভালো করে চুলের গোড়ায় অর্থাৎ স্ক্যাল্পে লাগান। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে নিন। কন্ডিশনারও ব্যবহার করুন। গবেষণা অনুযায়ী, স্ক্যাল্পের নানা সমস্যা সমাধানে নিম বেশ কার্যকর।

নিম তেল 

নিম পাতার মতো এর তেলও মাথার চুলকানি কমাতে সক্ষম। বাজার থেকে নিম তেল কিনে রাখতে পারেন। এতে রয়েছে নিম্বিডিন। গবেষণায় অনুযায়ী, এই উপাদান প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট উপাদান আছে। এগুলো স্ক্যাল্পের নানা সমস্যা দ্রুতই সমাধানে সক্ষম। তাই খুশকি, প্রদাহ ও চুলকানির মতো সমস্যা সমাধানে নিম তেল ব্যবহার করতে পারেন। 

মেথির প্যাক

১ টেবিল চামর মেথি নিন। ২ কাপ গরম পানি ভিজিয়ে রাখুন। আগের রাতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন সকালে মেথি পেস্ট করে নিন। গরম পানি মিশিয়ে মেথির পেস্ট দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন।

মেথিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, আয়রন ও পটাশিয়াম। চুলের খুশকি বা চুলকানি দূর করার জন্য এটি তাই খুব কাজে দেয়। এতে চুলের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। 

অ্যাপেল সিডার ভিনিগার

আধ কাপ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার আর আধা কাপ পানি ভালো করে মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করা চুলে এই মিশ্রণটি স্ক্যাল্প থেকে পুরো চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ভালো করে ম্যাসেজ করে ১৫ মিনিট রাখুন। এরপর চুল ধুয়ে নিন। 

নিয়মিত এই ঘরোয়া টোটকাগুলো ব্যবহারে মাথা থেকে খুশকি দূর হবে, কমবে চুলকানি। সেসঙ্গে আপনি পাবেন একগুচ্ছ স্বাস্থ্যকর চুল। 

পরিচ্ছন্নতা

মাথার ত্বকের সমস্যা ঠেকাতে চাইলে নিয়ম করে নিজের বালিশের কভার, চিরুনি, তোয়ালে পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিনের বেশি শ্যাম্পু করার প্রয়োজন নেই। ডায়েটের দিকে নজর দিন। খাদ্য তালিকায় যেন প্রোটিন আর ক্যালশিয়ামের অভাব না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। বারবার ব্লো ড্রাই বা হিট স্টাইলিং করলে কিন্তু এই সমস্যা আরও বাড়বে। গরম পানিতে গোসল করবেন না। নতুন কোনো হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্ট বা ডাই ব্যবহার করার আগে সতর্ক থাকবেন অবশ্যই। এগুলো থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে।

Next Post Previous Post