চুলে গোলাপ জলের ব্যবহার

সাধারণত সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গোলাপ জলের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে জানেন কী, গোলাপ জল চুলের জন্য সমান ব্যবহার করা সম্ভব। চুলের পুষ্টি যোগাতে ও ত্বককে সতেজ রাখতে গোলাপ জলের বিকল্প কিছু হয় না। চকচকে, মসৃণ ও ঘন চুল মহিলাদের সৌন্দর্যের অন্যতম প্রতীক। প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চাইলে মাত্র কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল ব্যবহার করলেই মিলবে সুফল। গোলাপ জল ত্বক পরিচর্চার জন্য একটি অতিপরিচিত উপাদান।

চুলে গোলাপ জলের ব্যবহার

চুলের ক্ষতি মেরামত করতে সাহায্য করে

মসৃণ চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে গোলাপ জলের মাসাজ বেশ কার্যকরী। মাথার ত্বকের লোপকূপকে পুনরুজ্জীবিত করতে গোলাপ জলের কয়েক ফোঁটাই যথেষ্ট। পছন্দের শ্যাম্পু করার পর গোলাপ জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চকচকে ও নরম হয়ে চুলের টেক্সচারই বদলে গিয়েছে।

খুশকি রোধ করতে সাহায্য করে

বাজারচলতি অ্য়ান্টি-ড্যান্ড্রফ শ্যাম্পু ব্যবহার করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছেন? এবার খুশকি থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক উপায় প্রতিকার মিলবে দ্রুত। একটি বাটিতে গোলাপ জলের মধ্যে মেথি বীজ ৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর দুটি মিশিয়ে একটি পেস্ট বানান। খুশকি দূর করতে স্ক্যাল্পে ওই পেস্ট লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু করে হালকা গরম জলে দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

তৈলাক্ত স্ক্যাল্প নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করুন

তৈলাক্ত স্ক্যাল্প নিয়ে ঝামেলার অন্ত নেই। অতিরিক্ত সেবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে হরমোন নির্গত হলে আপনার মাথার ত্বকে অতিরিক্ত পরিমাণে তেল উত্‍পন্ন হতে পারে। মাথার স্ক্যাল্পে ও চিটচিটে চুলের সমস্যার সমাধানের জন্য গোলাপ জল ব্যবহার বেশ উপকারী। চুলের সঠিক পুষ্টির জন্য মাথার ত্বকে ও চুলে গোলাপ জল ব্যবহার করলে তেলের পরিমাণ হ্রাস পায়।

শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে

আপনার শুষ্ক চুলকে ময়েশ্চারাইজড করতে গোলাপ জলের পুষ্টিগুণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাইরের তাপ ও দূষণের থেকে রক্ষা করতেও গোলাপ জলের ব্যবহার করতে পারেন। প্রাকৃতিকভাবে শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত চুল থেকে মুক্তি পেতে সপ্তাহে দুবার করে গোলাপ জল ব্যবহার করুন। গোলাপ জলের কয়েক ফোঁটা ব্যবহারের ফলে চুলে সিল্কি ভাব দেখা যায়। এছাড়া চুলের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গোলাপ জলের কয়েক ফোঁটাই ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

চুলের বৃদ্ধি ঘটায়

গোলাপজলে ভিটামিন এ, সি, ডি, ই এবং বি3 রয়েছে। ত্বক, চুল ও সার্বিক শরীর সুস্থ রাখতে এই পুষ্টি উপাদানগুলি জরুরি। গোলাপজল স্ক্যাল্পে সরাসরি স্প্রে করলে এ সব ভিটামিন ত্বক আর চুলের ফলিকলগুলোর গভীরে ঢুকে পুষ্টি জোগায় এবং চুলের বৃদ্ধি জোরদার হয়। গোলাপজল আসলে চুলের স্বাস্থ্যরক্ষার পানীয়, এভাবে বললে ভুল নেই!

চুল কন্ডিশন করে

গোলাপজলের আর্দ্রতাগুণ খুব বেশি, ফলে শুষ্ক ত্বকের মোকাবিলায় গোলাপজল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই শুষ্ক চুলের লিভ-ইন কন্ডিশনার হিসেবে গোলাপজল ভালো কাজ করে। বিশেষ করে যাঁদের বাইরে ঘুরে ঘুরে কাজ করতে হয়, তাঁদের চুল রুক্ষ হয়ে গেলে গোলাপজল ব্যবহার করুন। স্প্রে বটলে গোলাপজল ভরে সঙ্গে রাখুন, আর প্রয়োজনমতো চুলে স্প্রে করে নিন। চুলের শেষভাগ শুষ্ক আর ফাটা হলেও গোলাপজল স্প্রে করুন, চুল নিমেষে আর্দ্র আর নরম হয়ে যাবে।

চুল মজবুত করে

ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডান্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণের সুবাদে গোলাপজল আপনার প্রতিটি চুল মজবুত করে তোলে। চুলের বৃদ্ধি ঘটানো ছাড়াও চুল ওঠা আর চুল ভাঙাঝরা কমাতেও সক্ষম এই তরলটি! চুলের সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত করে তুলতে জুড়ি নেই গোলাপজলের।

নবীনতর পূর্বতন