সরিষার তেলের উপকারিতা এবং চুলে ও ত্বকে ব্যবহার

সরিষার তেলের উপকারিতা এবং চুলে ও ত্বকে ব্যবহার
 

সরিষার তেলে আছে মনোস্যাচুরেটেড ও পলিঅনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ। এই তেল শরীরের ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতেও সহায়ক।গ্লুকোসিনোলেটের উপস্থিতির কারণে সরষের তেলের ক্যানসার বিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে। এই উপাদানগুলো কলোরেক্টাল ও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের মতো ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেল রান্নার পাশাপাশি আরও অনেক উপায়েও ব্যবহার করা যায়। গরম সরিষার তেল দিয়ে জয়েন্টগুলোতে ম্যাসাজ করলে অস্বস্তি অনেকাংশে কমে যায়।

সরিষার তেলের উপকারিতা

ইমিউনিটি বুস্টার হিসাবে কাজ করে

সরিষার তেলের ঝাঁঝালো উপাদান শ্লেষ্মা এবং অবরুদ্ধ সাইনাস পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। রসুন ও লবঙ্গ দিয়ে সরিষার তেল গরম করে পা এবং বুকে মালিশ করলে সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

লোহিত রক্তকণিকা শক্তিশালী করে

প্লাজমা, কোষের লিপিডস এবং কোষের ঝিল্লির উপাদান হিসাবে বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনের জন্য আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় চর্বিগুলোর একটি প্রধান উৎস সরিষার তেল। এই তেল কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে এবং লোহিত রক্তকণিকার ঝিল্লি গঠনের উন্নতি করে।

কার্ডিওপ্রোটেক্টিভ প্রভাব

গবেষণায় দেখা গেছে যে, সরিষার তেল খেলে অ্যারিথমিয়াস, হার্ট ফেইলিও এবং এনজাইনা হ্রাস পেয়েছে। কার্ডিওভাসকুলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্তদের জন্য সরিষার তেল স্বাস্থ্যকর হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি ট্রাইগ্লিসারাইড, রক্তচাপ এবং প্রদাহ কমাতেও সহায়তা করে।

কাশি এবং সর্দি হ্রাস করতে সহায়তা করে

প্রাচীনকাল থেকেই সরিষার তেল কাশি, সর্দি এবং অন্যান্য শ্বাস প্রশ্বাসের অ্যালার্জি প্রশমিত করতে ব্যবহৃত হয়। সরিষার তেল দিয়ে স্টিম নিলে তা শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। সরিষার তেল সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

জয়েন্টে ব্যথা এবং বাত থেকে মুক্তি দেয়

সরিষার তেল নিয়মিত মালিশ করলে তা পেশী এবং জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। সরিষার তেলে থাকা ওমেগা ৩ আর্থ্রাইটিসের কারণে সৃষ্ট কঠোরতা এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।

ফ্যাটের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে সরিষার তেল

সরিষার তেলের কড়া ঝাঁঝের জন্য আজকাল অনেকে ব্যবহার করতে চান না। কিন্তু এতে আছে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড কেবল খাবারের স্বাদই উন্নত করে না, রক্তে চর্বির মাত্রাও হ্রাস করে।

সরিষার তেল যেভাবে ওজন কমায়


সরিষার তেল হার্ট, হাড়, হজম ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর। এতে মনোস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যারা পেটের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন তারা প্রতিদিনের রান্নায় সরিষার তেল ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।

এই তেল হজমশক্তি বাড়ায়। আর খাবার দ্রুত হজম হলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই তেলে থাকে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। সরিষার তেল লিভারের কার্যকারিতাও উন্নত করে। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না বরং রক্তে চর্বির মাত্রাও হ্রাস করে। যেখানে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রাকৃতিকভাবে শরীরে সঞ্চিত বাদামি চর্বির ব্যবহার বাড়ায়।

চুলে সরিষার তেল ব্যবহারের উপকারিতা

১. প্রাকৃতিক কন্ডিশনার সরিষার তেলে আলফা ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা চুল সুন্দর ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল রাখে। এ ছাড়া আলফা ফ্যাটি অ্যাসিড দারুণ কন্ডিশনারের কাজ করে। ফলে চুল দ্রুত বাড়ে।

২. চুলে নিয়মিত সরিষার তেল মালিশ করলে ফলিকল মজবুত হয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে। ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সরিষার তেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম মিনারেল এবং ভিটামিন এ ডি ই ও কে। এ ছাড়া থাকে জিংক, বিটা ক্যারোটিন ও সেলেনিয়াম, যা চুল লম্বা হতে সাহায্য করে।

৩. রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে চুল রুক্ষ, শুষ্ক, নিষ্প্রাণ হয়ে গেলে নিয়মিত মাথার তালুতে সরিষার তেল মালিশ করুন। ফলে মাথার তালুতে রক্ত সঞ্চালন ঠিকভাবে হবে এবং চুলের গোড়া মজবুত হয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে। এ ছাড়া চুল সুন্দর, বড়, মজবুত ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করতে সরিষার তেল অত্যন্ত উপকারী।

ত্বকে সরিষার তেল ব্যবহারের উপকারিতা

মুখে সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করলে ত্বকে অনেক উপকার মেলে। সরিষার তেল দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে মুখের দাগ দূর হবে।

ফেসপ্যাক তৈরির পদ্ধতি


২ চামচ সরিষার তেল, ১ চামচ বেসন, ১ চামচ দই এবং আধা চামচ লেবুর রস নিন। একটি বাটিতে সরিষার তেল, দই, বেসন ও লেবুর রস একসঙ্গে ভালোভাবে মিশ্রিত করে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এর পর মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সরিষার তেলের ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বকের ডার্ক স্পট কমার পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল হয়। 

Next Post Previous Post