এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম এবং উপকারিতা

 

এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম

এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। তার মধ্যে সহজে করা যায় হচ্ছে, একটি পাত্রে অ্যালোভেরা জেল এবং লেবু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ প্রস্তুত করুন। এবার এই মিশ্রণটি আপনার চুলের গোড়ায় লাগান এবং তারপর আঙ্গুল দিয়ে চুলের মাঝখানে লাগান। এখন এটি 20-25 মিনিটের জন্য থাকতে দিন। তারপর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগান। আমরা আরো অন্য রকম নিয়ম নিয়ে আলাপ আলোচনা করবো। 

এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম

অ্যালোভেরা ও ক্যাস্টর অয়েলের হেয়ার মাস্ক

এই হেয়ার মাস্ক চুলের ক্ষয়, স্প্লিটেন্ড, চুল পড়া, খুশকি ইত্যাদি হাত থেকে রক্ষা করে এবং তার সঙ্গে চুলকে নরম করে তোলে। এই হেয়ার মাস্ক তৈরি করার জন্য প্রয়োজন ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল, দু চামচ ক্যাস্টর অয়েল এবং দু চামচ মেথি গুঁড়ো। তিনটি উপাদানকে আগে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর সেটা চুলের ওপর ভাল করে প্রয়োগ করুন। বিশেষত চুলের স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ভাল করে ম্যাসাজ করুন। এবার ওই অবস্থাতেই শাওয়ার ক্যাপ লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পর দিন ঘুম থেকে উঠে চুলে শ্যাম্পু করে নিন এবং কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। এতেই ফল পাবেন হাতে-নাতে।

অ্যালোভেরা ও পিঁয়াজের রস

এই হেয়ার মাস্ক চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তার সঙ্গে চুলের পড়ে যাওয়াকেও রোধ করে। এই হেয়ার মাস্ক তৈরি করার জন্য প্রয়োজন এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং পরিমাণ মত পিঁয়াজের রস। আপনার চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী পিঁয়াজের পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর সেটিকে ছেঁকে রসটা বার করে নিন। মনে রাখবেন, বেশি পরিমাণ পিঁয়াজের রস চুলের স্ক্যাল্পের ক্ষতি করতে পারে, তাই পরিমাণ মত পিঁয়াজের রস নিন। এবার সেই রসে অ্যালোভেরা জেল যোগ করে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার এই মাস্কটিকে চুলের স্ক্যাল্প থেকে শুরু করে সমগ্র চুলের ওপর প্রয়োগ করুন এবং এক ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর চুলে শ্যাম্পু করে নিন এবং কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। এতেই ফল পাবেন হাতে-নাতে।

অ্যালোভেরা ও মধু

অ্যালোভেরা ও মধুর তৈরি এই হেয়ার মাস্ক চুলকে কোমল করে তুলতে এবং খুশকির সমস্যা দূর করতে সহায়ক। এই হেয়ার মাস্ক তৈরি করার জন্য প্রয়োজন ৫ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল, ৩ টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং ২ টেবিল চামচ মধু। এই তিনটি উপাদানকে ভাল করে মিশিয়ে একটি মসৃণ প্যাক বানিয়ে নিন। তারপর সেটা চুলের স্ক্যাল্প থেকে শুরু করে সমগ্র চুলে ভাল করে লাগিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি ২৫ মিনিট মত চুলে রেখে দিন এবং তারপর ঠাণ্ডা জলে শ্যাম্পু করে নিন। কন্ডিশনার অবশ্যই লাগাবেন শ্যাম্পুর পরে।

চুলের যত্নে এলোভেরার উপকারিতা

চুলের বৃদ্ধিকে সাহায্য করে 

অ্যালোভেরা জেল সম্পর্কিত একটি গবেষণায় বিশ্বাস করা হয়েছে যে এটি চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাতে কাজ করতে পারে। এছাড়াও, এটি মাথার ত্বকে রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলকে শক্তিশালী করতে কাজ করতে পারে। এইভাবে অ্যালোভেরা চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে। এই ভিত্তিতে, এটি বিশ্বাস করা যেতে পারে যে চুলের যত্নে এলোভেরা উপকারী এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক প্রমাণিত হতে পারে।

মাথার ত্বকের খুশকি এবং চুলকানি দূর করুন

অ্যালোভেরা সম্পর্কিত একটি গবেষণায় অ্যান্টিড্যান্ড্রাফ (খুশকি-অপসারণ) প্রভাব রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এই কারণে এটি চুলের কন্ডিশনার এবং শ্যাম্পুতে প্রধান উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এর সাথে, এটি ত্বক সম্পর্কিত চুলকানি দূর করতেও সহায়ক হতে পারে। ভিটামিন-সি ভিটামিন বি 1, বি 2, বি 6 এবং বি 12 অ্যালোভেরায় উপস্থিত এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এমন অবস্থায়, এটা বললে ভুল হবে না যে অ্যালোভেরা মাথার ত্বকের খুশকি এবং চুলকানির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

চুল পড়া রোধ করে

চুল পড়া রোধেও অ্যালোভেরার ব্যবহার কাজ করতে পারে। অ্যালোভেরা সম্পর্কিত চুল নিয়ে করা একটি গবেষণায় এটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণায় বিশ্বাস করা হয় যে অ্যালোভেরায় সিস্টাইন এবং লাইসিন নামক উপাদান পাওয়া যায়, যা চুল পড়া সমস্যা রোধে সহায়ক। এই ভিত্তিতে, চুল পড়া রোধ করতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যেতে পারে।

জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য 

অ্যালোভেরা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রভাব সমৃদ্ধ। একই সময়ে, এতে ছয় ধরণের অ্যান্টিসেপটিক এজেন্ট পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে লুপিওল, স্যালিসিলিক অ্যাসিড, ইউরিয়া নাইট্রোজেন, সিনামোনিক অ্যাসিড, ফেনল এবং সালফার। এই সবের উপস্থিতির কারণে, এটি মাথার ত্বকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হতে পারে। এর পাশাপাশি এটি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং তাই এটি কন্ডিশনার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

Next Post Previous Post